সংবিধানের মৌলিক অধিকারগুলিকে রপ্ত ও লাগু করার মাধ্যমে সমাজটাকে পালটাতে হবে। মানুষ তাদের অধিকার সম্পর্কে সচেতন নয় বলেই শাসকদল তাদের অধিকারগুলি থেকে বঞ্চিত রাখতে পারছে। ইন্ডিয়ান সেকুলার ফ্রন্ট এই অবস্থা পালটাতে চাই। আজ মুর্শিদাবাদের হরিহারপাড়ায় এক সুবিশাল সমাবেশে এই কথা বলেন আইএসএফের চেয়ারম্যান তথা বিধায়ক নওসাদ সিদ্দিকী। তিনি বলেন, সমাজ ব্যবস্থা পালটানোর লড়াইয়ের সামিল হয়েছি বলেই আমাদের ওপর এত অত্যাচার, অবিচার, অপপ্রচার, মিথ্যা মামলা। কিন্তু হকের জন্য লড়াইয়ে মিথ্যা পরাজিত হবেই। মুর্শিদাবাদ ভারতের মধ্যে পিছিয়ে থাকা জেলার মধ্যে অন্যতম। তার একটা বড় কারণ এখানকার বেশিরভাগ মানুষ নিজের অধিকারের বিষয়ে আজ পর্যন্ত সেভাবে সচেতন হননি। সচেতন হবার সময় এসেছে বলে জানিয়ে তিনি বলেন, আবাস যোজনা নিয়ে কোন দুর্নীতি চোখে পড়লেই সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের নজরে আনতে হবে। সেখানে সুরাহা না হলে আইএসএফ নেতৃত্বকে বলবেন। দল বিষয়টি দেখে নেবে। সমাবেশে দলের রাজ্য সম্পাদক বিশ্বজিত মাইতি রাজ্যের শাসক তৃণমূল কংগ্রেসের তুমুল সমালোচনা করেন। তিনি বলেন, এই রাজ্যের কৃষ্টি, সংস্কৃতি, সম্প্রীতি এই দলটি নষ্ট করে দিচ্ছে। জল-জমি-জঙ্গল তুলে দিচ্ছে কর্পোরেট ব্যবসায়ীদের হাতে। তৃণমূলের হাতে সংখ্যালঘু-আদিবাসী-দলিতরা আজ আক্রান্ত। তাই তৃণমূল কংগ্রেসের বিরুদ্ধে লড়তে রাস্তাতেই থাকতে হবে।
আইএসএফের মালদা জেলার সম্পাদক কারিমুল্লাহ্ হক তাঁর বক্তব্যে মালদা ও মুর্শিদাবাদ জেলার নানান বঞ্চনার চিত্র তুলে ধরেন। তিনি বলেন, নদী ভাঙন রোধে স্থায়ী সমাধান, মুর্শিদাবাদে পূর্ণাঙ্গ বিশ্ববিদ্যালয় গঠন, বিড়ি শ্রমিকদের সমস্যার সমাধান করতে হলে সংসদে বলিষ্ঠ ও উপযুক্ত কন্ঠের প্রয়োজন। কারণ বিগত দিনে কেন্দ্রে, রাজ্যে বিভিন্ন দল ক্ষমতায় থাকলেও এবং এখানের নির্বাচনি ক্ষেত্রগুলি থেকে বিভিন্ন দল সরকারের প্রতিনিধিত্ব করলেও এই এলাকার কৃষি, শিক্ষা, স্বাস্থ্য, গঙ্গাভাঙ্গন, পরিযায়ী শ্রমিক ইত্যাদি বিষয়ে তারা কোনো নজর দেননি বরং তারা এখানকার আর্থসামাজিক ভাবে পিছিয়ে পড়া মানুষদের ঠকিয়েছেন। তাই আগামী দিনে নাগরিক পরিষেবা ও সাংবিধানিক অধিকার আদায়ের লক্ষ্যে নিজস্ব দল আইএসএফকে এখানে মজবুত করার আহ্বান জানান।
আরো বক্তব্য রাখেন দলের মুর্শিদাবাদ জেলা সভাপতি হাবিব শেখ তিনি রাজ্যের কর্মসংস্থান বিলুপ্ত হয়ে যাওয়া, পর্যাপ্ত আধুনিক সরকারি স্বাস্থ্য ব্যবস্থা না থাকা নিয়ে সরব হন। তিনি বলেন এই জেলার এবং প্রান্তিক মানুষের সার্বিক বিকাশের প্রচেষ্টা করবেন এবং লোকসভায় তাদের সমস্যা নিয়ে সরব হবেন এমন সুযোগ্য সাহসী প্রতিনিধিদের আগামী লোকসভা নির্বাচনে আইএসএফের পক্ষ থেকে জিতিয়ে সংসদে পাঠাতে আবেদন করেন।
এই জনসভায় জেলা নেতৃত্ব এবং হরিহরপাড়া বিধানসভা নেতৃত্ব উপস্থিত ছিলেন।
ধন্যবাদ আপনার মূল্যবান সময় দেওয়ার জন্য