Followers

Ad

কিভাবে বসন্ত বরণের আগে চুলের যত্ন নেওয়া প্রয়োজন - প্রি-বসন্ত চুলের যত্নের প্রয়োজনীয়তা

কিভাবে বসন্ত বরণের আগে চুলের যত্ন নেওয়া প্রয়োজন - প্রি-বসন্ত চুলের যত্নের প্রয়োজনীয়তা


     বসন্ত প্রায় আগত। প্রকৃতি ইতিমধ্যে বসন্তের আগমনী বার্তা বেজে ওঠেছে। আর বসন্তের আগমন ঘটে প্রকৃতির শুষ্কতা দিয়ে। বসন্তের শুষ্ক প্রকৃতিতে বাতাসে ধুলাবালি অপেক্ষাকৃত বেশি থাকে। এই সময়ে নিয়মিত শ্যাম্পু করলেও চুলের বাড়তি যত্ন প্রয়োজন হয়। বসন্ত থেকেই গরম পরতে থাকে। তাই চুলের ধরন অনুযায়ী তারতম্য ঘটে চুলের যত্নের। আর চুলের যত্ন নেওয়ার আগে জেনে নিতে হবে দরকার চুলের ধরন।

বসন্তে স্বাভাবিক চুলের যত্ন : 

চুলের মসৃণতা বজায় রাখার জন্য নিয়মিত তেল দেওয়ার বিকল্প নেই। অনেকে সপ্তাহে তিনদিনও তেল দেন। ব্যস্ততার কারণে অনেকে সেটা পারেন না। তারা সপ্তাহে একদিন তেল গরম করে মাথার তালুতে ম্যাসাজ করুন ১৫/২০ মিনিট। এরপর গরম পানিতে ভেজানো টাওয়েল চুলে পেঁচিয়ে রাখুন। একটা ডিম, দুই চামচ মধু, দুই চামচ অলিভ অয়েল, সামান্য মেথি গুঁড়া একসঙ্গে মিশিয়ে পেস্ট করে চুলে মাখুন। প্যাকটি চুলে ২৫/৩০ মিনিট রেখে ধুয়ে ফেলুন।

স্বাভাবিক চুলের তেল :

স্বাভাবিক চুলের যত্নে ব্যবহার করুন দু'ফোঁটা রোজমেরি অয়েল, জোজোক অয়েল। কারণ শীতের শুষ্কতার পর বসন্তের বাতাসে চুল হয়ে ওঠে রুক্ষ ও শ্রীহীন। চুলের হারানো আর্দ্রতা ও মসৃণতা ফিরিয়ে আনতে চাই কন্ডিশনিং। চুলের যত্নে কন্ডিশনার ইচ্ছা করলে আপনি বাড়িতেই তৈরি করতে পারেন। তবে স্বাভাবিক চুলের সুবিধা হলো, যে কোনো তেল চুলের যত্নে ব্যবহার করা যায়।

কন্ডিশনার :

একটি ডিম ফেটিয়ে তাতে এক চামচ শিকাকাই পাউডার, থেঁতো করা স্ট্রবেরি, দু'চামচ টক দই একসঙ্গে মিশিয়ে পুরো চুলে লাগিয়ে রাখুন। এক ঘণ্টা পর চুল ধুয়ে ফেলুন। চুলের জন্য তেল সবচেয়ে ভালো কন্ডিশনার। এছাড়া শ্যাম্পুর পর চায়ের লিকার দিয়ে চুল ধুয়ে ফেললেও চুলের ভালো কন্ডিশনিং হয়।

তৈলাক্ত চুলের যত্ন :

এই ধরনের চুলে মাথার তালু বেশি তৈলাক্ত থাকে। তাই প্রয়োজন বিশেষ পরিচর্যার। তেলতেলে চুলের অধিকারী হলে সপ্তাহে একদিন গরম তেল ম্যাসাজ করুন এবং একদিন অন্তর শ্যাম্পু করুন। তৈলাক্ত চুল পরিস্কারের উপযোগী শ্যাম্পু আপনি বাড়িতেও তৈরি করতে পারেন। রিঠা, শিকাকাই, আমলা সারারাত ভিজিয়ে পরদিন ফুটিয়ে ছেঁকে নিন। তরল মিশ্রণটি শ্যাম্পুর বিকল্প হিসেবে ব্যবহার করুন। সপ্তাহে দু'দিন বাড়িতে তৈরি হেয়ারপ্যাক লাগান। দুই চামচ নিমপাতা গুঁড়া, দুই চামচ মেথি গুঁড়া, দুই চামচ আমলা পাউডার, দুই চা চামচ টক দই, ডিমের সাদা অংশ, দুই চা চামচ গরম পানি একসঙ্গে মিশিয়ে প্যাক বানান। পুরো চুলে ঘণ্টাখানেক লাগিয়ে রাখুন। এরপর শ্যাম্পু করে ধুয়ে ফেলুন। শেষে চায়ের লিকার দিয়ে মাথা ধুয়ে ফেলুন। এতে চুলের উজ্জ্বলতা ফিরে আসবে।

কন্ডিশনার :

তৈলাক্ত চুলে টক দইয়ের সঙ্গে লেবু, আমলকীর রস, সেই সঙ্গে ডিমের সাদা অংশ মাখলে চুলে উপকার পাবেন।

শুষ্ক চুলের যত্ন : 

চুল শুষ্ক হলে একদিন অন্তর অলিভ অয়েল বা নারিকেল তেলের সঙ্গে ক্যাস্টর অয়েল মিশিয়ে গরম করে পুরো চুলে ও স্কাল্পে ম্যাসাজ করুন ২০/২৫ মিনিট। এরপর গরম পানিতে টাওয়েল ভিজিয়ে স্টিচ নিন। ভেষজ শ্যাম্পু দিয়ে চুল ধুয়ে নিন এবং কন্ডিশনার লাগান। শেষে চায়ের লিকার দিয়ে চুল ধুয়ে ফেলুন। যাদের চুল রুক্ষ, শুষ্ক ও লালচে তারা একটি জবাফুল বাটা, দুই চামচ মধু ও এক চামচ আমলকী বাটা, টক দই, ডিমের কুসুম, মেথি গুঁড়া, ক্যাস্টর অয়েল একসঙ্গে মিশিয়ে পুরো চুলে ঘণ্টাখানেক লাগিয়ে রাখুন। তারপর ভেষজ শ্যাম্পু দিয়ে চুল ধুয়ে ফেলুন এবং কন্ডিশনার লাগিয়ে ৪/৫ মিনিট রেখে ধুয়ে ফেলুন হালকাভাবে।

কন্ডিশনার :

একটি পাকা কলার সঙ্গে এক চা চামচ মধু, আধা চা চামচ দুধের সর ও এক চা চামচ আমন্ড অয়েল মিশিয়ে পেস্ট বানিয়ে পুরো চুলে লাগিয়ে রাখুন। এক ঘণ্টা পর চুল ধুয়ে ফেলুন।

খুশকি :

খুশকি কোনো রোগ বা রোগের লক্ষণ নয়। এটি স্কাল্পের শুস্ক চামড়া, যা সবারই কমবেশি হয়ে থাকে। চুল পড়া ও খুশকি ৮০ শতাংশের হয়ে থাকে। বসন্তে এ সমস্যা অনেকেরই দেখা দেয়। নিজের চিরুনি, ব্রাশ, তোয়ালে, বালিশের কভার যথাসাধ্য পরিস্কার ও আলাদা রাখুন। মেডিকেটেড শ্যাম্পু, মাইকোনাজোনযুক্ত লোশন, ক্ষেত্রবিশেষে স্টেরয়েড লোশন ব্যবহারে সম্পূর্ণ সেরে যায়। তবে খুশকি নিরাময়ে ঘরোয়া হারবাল পদ্ধতি অবলম্বন করাই ভালো।

চুল ভালো রাখতে : 

কম্বিং: 

ভেজা চুল বেশি আঁচড়াবেন না। ভেজা চুল বেশি আঁচড়ালে চুল টান পড়ার কারণে চুলের আগা ফেটে যায়। ভেজা চুল আঁচড়ানো বা বাঁধা কোনোটিই ঠিক নয়। একান্তই আঁচড়াতে হলে মোটা দাঁতের চিরুনি ও ব্রাশ ব্যবহার করা ভালো। চিরুনির দাঁতের মাথায় ছোট ছোট বল থাকলে ভালো। তাতে স্কাল্পে আঘাত লাগবে না ও মাথার তালুতে রক্ত সঞ্চালন করবে। তৈলাক্ত চুল হলে বেশি আঁচড়াবেন না।

শ্যাম্পু :

প্রয়োজনে প্রতিদিন শ্যাম্পু করুন। চুল ভালো রাখতে সর্বপ্রথম প্রয়োজন পরিচ্ছন্নতা। চুল পরিস্কার করার সময় শ্যাম্পু ব্যবহারে কৃপণতা করবেন না। চুল ধোবেন প্রচুর পানি দিয়ে, যেন শ্যাম্পু লেগে না থাকে। নিজের চুলের ধরন অনুযায়ী শ্যাম্পু ও কন্ডিশনার ব্যবহার করুন।

কন্ডিশনার :

     শুষ্ক ও সরু চুলে ঠিকমতো কন্ডিশনার ব্যবহার করলে চুল আপনার কন্ট্রোলে থাকবে। নিজের চুলের ধরন অনুযায়ী কন্ডিশনার ব্যবহার করুন ও তা পরিমাণমতো লাগান। বেশি লাগালে চুল নেতিয়ে থাকবে। শ্যাম্পু করার পর মাথা নিচু করে সব চুল সামনে এনে শুধু চুলের আগায় কন্ডিশনার লাগান। দুই/তিন মিনিট রেখে ধুয়ে ফেলুন। শ্যাম্পু করার পর এক মগ পানিতে এক ফোঁটা নারকেল তেল দিয়ে চুল ধুয়ে ফেলুন। সরিষার তেলও কন্ডিশনার হিসেবে ভালো। কয়েক ফোঁটা সরিষার তেল শ্যাম্পু করার পর ভেজা চুলে লাগিয়ে চুল ভালোভাবে ধুয়ে ফেলুন।

    এছাড়াও চুলের উজ্জ্বলতার জন্য লেবু সব ধরনের চুলের ক্ষেত্রে ভালো কন্ডিশনার। শ্যাম্পুর পর পানির সঙ্গে কয়েক ফোঁটা লেবুর রস মিশিয়ে ধুয়ে ফেললে উপকার পাবেন। মেয়নেজ গরম করে চুলে মেখে ৩০ মিনিট রেখে ধুয়ে ফেলুন। এতে চুল হয়ে উঠবে উজ্জ্বল। রক্তজবা ফুল বেটে চুলে লাগালে চুল কালো হয়। এখন বিভিন্ন চুলের যত্নে হারবাল প্যাক পাওয়া যায়, যা চুলের যত্ন সহজ করে তুলেছে।

আমরা হোয়াটঅ্যাপে আছি  Clikc to join

Post a Comment

0 Comments
* Please Don't Spam Here. All the Comments are Reviewed by Admin.

Top Post Ad

Below Post Ad

CLOSE ADS
CLOSE ADS